যুক্তরাষ্ট্রে সফল ভারতীয় সিইওদের অন্যতম অঞ্জলি সুদ

 যুক্তরাষ্ট্রে সফল ভারতীয় সিইওদের অন্যতম অঞ্জলি সুদ

ভিমিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জলি সুদ

বছর পাঁচেক আগে ভিডিও দেখার ওয়েবসাইট ভিমিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে বসেন অঞ্জলি সুদ। সে সময় নেটফ্লিক্স, হুলু আর অন্যান্য ভিডিও স্ট্রিমিং সেবার মধ্যে লড়াইটা সবে শুরু হয়েছে। অঞ্জলি বুঝলেন, এ লড়াই তাঁর নয়। এতে বহু কাঠখড় পুড়বে। সে পথে তিনি হাঁটলেনও না। বরং ভিমিওর শক্তি খুঁজতে শুরু করলেন।

ভিডিও নির্মাতা এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা দিতে শুরু করেন। মানে একজন নির্মাতা ভিমিওর সাহায্যে নিজস্ব নেটফ্লিক্স খুলে বসতে পারছেন। দর্শক চাইলে টাকা খরচ করে ওই নির্মাতার ভিডিও দেখবে। নেটফ্লিক্সের প্রতিযোগী থেকে ভিমিওকে সফটওয়্যার সেবাদাতায় পরিণত করলেন।

আর এভাবেই ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট থেকে ভিমিও এখন তথ্যপ্রযুক্তি প্ল্যাটফরমে পরিণত হয়েছে। একক ভিডিও নির্মাতা থেকে শুরু করে বড় বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠান—এক হাজারের বেশি সাবস্ক্রিপশন-নির্ভর ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা রয়েছে সাইটটিতে। মোড় ঘুরিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে সফলতার দিকে যিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, সেই অঞ্জলি সুদের মুখেই আজ আমরা শুনব, কাজটি তিনি কীভাবে করেন। ভিমিওতে পোস্ট করা সাক্ষাৎকারের পরিমার্জিত অংশ আমরা প্রকাশ করছি এখানে। তবে শুরুতে আমরা বরং তাঁর সম্পর্কে জেনে নিই।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত অঞ্জলির জন্ম মার্কিন শহর ডেট্রয়েটে
ভারতীয় বংশোদ্ভূত অঞ্জলির জন্ম মার্কিন শহর ডেট্রয়েটে
এখানে ক্লিক করে সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানুন

৩৯ বছর বয়সী অঞ্জলির লিংকডইন প্রোফাইল বলছে, প্রধান নির্বাহী হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে ভিমিওর বিপণন পরিচালক, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারও আগে আমাজন ও টাইম ওয়ার্নারের মতো বড় প্রতিষ্ঠানে বড় পদে কাজ করে এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার দ্য ওয়ার্টন স্কুল থেকে ফিন্যান্স ও ব্যবস্থাপনায় বিএসসি এবং হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ করেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত অঞ্জলির জন্ম মার্কিন শহর ডেট্রয়েটে।

ভিমিওতে আপনার কাজ কী?

অঞ্জলি সুদ: আমার কাজ ভিমিওর লক্ষ্য পূরণ করা। আর তা হলো, ভিডিওর মাধ্যমে নির্মাতাদের চমৎকার গল্প বলতে সাহায্য করা। আমি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা শতশত ভিমিয়ানসদের (ভিমিও কর্মী) নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমরা যা-ই করি, তা ভিডিও নির্মাতাদের জন্যই।

আপনি কি শৈশব থেকেই নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় থাকতে চেয়েছেন?

অঞ্জলি সুদ: আপনি যদি আমার বন্ধু বা আত্মীয়দের জিজ্ঞাস করেন, তাঁরা বলবে আমি সব সময় বস হতে চেয়েছি (হাসি)। সত্যি ঘটনা হলো, আমি সব সময় অবদান রাখতে চেয়েছি। ব্যবসায় সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে—এমনটা শুনে শুনেই আমি বড় হয়েছি। তবে আমি জানতাম না, কী ধরনের বা কোন খাতে, আমি তো নেতৃত্ব মানে কী, তা-ও জানতাম না। আমি চেয়েছিলাম এমন কিছু নিয়ে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে যা আমি নিজে বিশ্বাস করি, সেটার উন্নয়নেই কাজ করে যেতে চেয়েছি।

আরও পড়ুন: সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যা যা করেন বিল গেটস
ভিমিওর আগে আমাজন ও টাইম ওয়ার্নারের মতো বড় প্রতিষ্ঠানে বড় পদে কাজ করে এসেছেন অঞ্জলি সুদ। ছবি: আইএসি

প্রধান নির্বাহী হয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যা শিখেছেন…

অঞ্জলি সুদ: বিপণনের দায়িত্ব থেকে আমি যখন হটাত করে পণ্য, প্রকৌশল এবং বিক্রয়োত্তর সেবার দায়িত্বে এলাম, সত্যি বলতে, আমি সে সব কাজের কিছুই জানতাম না। একটা কাজ এখন আমি গুরুত্ব নিয়ে করি…আমি হয়তো বিপণনের কথা মাথায় রেখে কোনো সমস্যার সমাধান খুঁজছি। আবার কক্ষে অন্য যারা থাকেন, তাঁদের কেউ হয়তো কারিগরি বা ব্যবহারকারীর অবস্থান থেকে সমাধানের পথ খুঁজছেন। সবার কথা শুনে আমরা সেরা সিদ্ধান্তটা নিতে পারি।

যারা নেতৃত্ব দিতে চায়, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ?

অঞ্জলি সুদ: প্রথমে এমন কিছু খুঁজে বের করতে হবে যেটাতে আপনার প্যাশন আছে। অনেকেই এ কথা বলেন। তবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন নেতা হতে চাইলে কিংবা আপনি যা করছেন, তা ভালো করে করতে চাইলে খুঁটিনাটি আপনাকে দেখতে হবে, আর প্যাশন না থাকলে আপনি সেটা করতে পারবেন না।
আরেকটি উপদেশ হলো, সমাধান বের করে আনো। চাকরির ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীদের মধ্যে এটা আছে কি না আমি দেখি। অনেক স্মার্ট এবং কর্মঠ কর্মী সমস্যা নিয়ে ভাবে। সেটা অবশ্যই ভালো। সমস্যা চিহ্নিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমি মনে করি, ভালো নেতা সেখানে থেমে থাকে না। তাঁরা সব সময় সমাধানের পথ বের করে আনে। নেতার মধ্যে এই গুণটা আমি দেখতে চাই। আর এমন নেতা আমিও হতে চাই।

আরও পড়ুন: সুন্দর পিচাই যেভাবে গুগলের সিইও হলেন

আরও পড়ুন

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.