আইফোন কেনার সঙ্গে কিডনি বেচার সম্পর্ক কী
![আইফোন কেনার সঙ্গে কিডনি বেচার সম্পর্ক কী](https://www.thewindowshow.com/wp-content/uploads/2023/02/Apple_iphone13_design_09142021-850x506.jpg)
বাজারে নতুন আইফোন এলেই কিডনি বেচা নিয়ে অনেক মিম আর ট্রল দেখা যায় সামাজিক মাধ্যমজুড়ে। ছবিতে অ্যাপলের নতুন স্মার্টফোন আইফোন ১৩। ছবি: অ্যাপল
অনেকে বলবেন এ কেমন প্রশ্ন? আইফোনের যা দাম, তাতে কিডনি বেচা ছাড়া উপায় কী? যার পকেটে আইফোন আছে, তাঁর কিডনির সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেও কারও বাধে না। কিডনি নিয়ে এমন কৌতুক যুগে যুগে, কালে কালে কম হয়নি। অনাগত কালেও যে চলবে, তা-ও মোটামুটি প্রশ্নাতীত। আমরা বরং পেছনে ফিরে দেখার চেষ্টা করতে পারি, জানার চেষ্টা করতে পারি, কে কবে সে কৌতুকের সূচনা করেন।
ওয়াং সাংকুন এখন যুবক, বয়স ২৭ কি ২৮। ২০১১ সালে তাঁর বয়স যখন ১৭, সত্যি সত্যি নিজের ডান পাশের কিডনি বেচে দিয়েছিলেন। বিনিময়ে পেয়েছিলেন প্রায় ৩ হাজার ২৭৩ ডলার। এই অর্থে একটি আইপ্যাড ২ ও একটি আইফোন ৪ কিনেছিলেন তিনি। হাতে আইফোন নিয়ে বলেছিলেন, ‘দুটি কিডনি দিয়ে কী হবে? একটিই যথেষ্ট।’ যথেষ্ট কি না, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ওয়াং।
২০১১ সালে ওয়াং থাকতেন চীনের আনহুই প্রদেশে। অনলাইন চ্যাটরুমে একদিন বার্তা পেলেন, চাইলে শরীরের অঙ্গ বেচে তিন হাজার ডলারের বেশি আয় করতে পারেন। সে বার্তা পাঠিয়েছিল মানব-অঙ্গ কালোবাজারিরা। ওয়াংয়ের কি অতশত ভাবার সময় আছে? নতুন আইফোন হাতে তোলার স্বপ্নে তিনি বিভোর।
![ওয়াং সাংকুন এখন শয্যাশায়ী। ছবি: সংগৃহীত](https://www.thewindowshow.com/wp-content/uploads/2023/02/PAY_Wang_Shangkun.jpg)
কয়েক দিন পরই চীনের হুনান প্রদেশের এক হাসপাতালে ওয়াংয়ের শরীরে অস্ত্রোপচার করে ডান পাশের কিডনি বের করে নেওয়া হয়। সেটা যে অবৈধ ছিল, তা না বললেও চলে। ১৭ বছর বয়সী ওয়াং অভিভাবকদের না জানিয়েই কাজটি করেছিলেন।
তাঁর মা জেনেছিলেন পরে। ওয়াংয়ের হাতে দামি আইফোন দেখে সন্দেহ হয় তাঁর মায়ের। একটু খোঁচাতেই অস্ত্রোপচারের ব্যাপারটি বেরিয়ে আসে। জানাজানি হলে অবৈধভাবে অঙ্গ বেচাকেনার জন্য গ্রেপ্তার হন নয়জন, পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
এক কিডনি নিয়ে ওয়াংয়ের বিপদটা হলো, অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। কয়েক মাসের মধ্যেই অবশিষ্ট কিডনিতেও সংক্রমণ দেখা দেয়। সেবা–শুশ্রূষা না পাওয়াও ছিল একটা কারণ। ক্রমে অবস্থার অবনতি হয়। এখন তিনি পুরোপুরি শয্যাশায়ী। নিয়মিত ডায়ালাইসিস ছাড়া চলছে না।
বাজারে নতুন আইফোন এলেই কিডনি বেচার প্রসঙ্গ আসে। এর পেছনে ওয়াং সাংকুনের ঘটনাটিই দায়ী কি না, তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে তেমনটাই অবশ্য ধারণা অনেকের।