গ্রহাণু ধেয়ে এলে কী করবে নাসা
মনে করুন, মহাকাশ থেকে ধেয়ে এল বিশাল কোনো গ্রহাণু। মাস ছয়েক পর আঘাত হানবে পৃথিবীতে। সংঘর্ষ এড়ানোর উপায় বের করতে বলা হলো বিজ্ঞানীদের। তবে তাঁরা শোনালেন হতাশার বাণী।
সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে গত মাসে এমনই এক পরীক্ষা চালিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। উদ্দেশ্য ছিল, পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুর সম্ভাব্য সংঘর্ষ ঠেকানোর উপায় উদ্ভাবনে আমাদের সক্ষমতা বোঝা।
ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব অ্যারোনটিকস প্ল্যানেটারি ডিফেন্স কনফারেন্সের অংশ হিসেবে পরীক্ষাটি চালায় নাসা। পরীক্ষার স্বার্থে কাল্পনিক ঘটনাপ্রবাহ তৈরি করা হয়। বলা হয়, সাড়ে তিন কোটি মাইল দূরের কোনো রহস্যময় গ্রহাণু ছুটে আসছে পৃথিবীর দিকে। ছয় মাস পর সেটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে। বিজ্ঞানীদের কাজ হলো, ‘২০২১পিডিসি’ নামের কাল্পনিক গ্রহাণুটি হয় থামিয়ে দিতে হবে, নয়তো সেটির গতিপথ বদলে দিতে হবে।
বিজ্ঞানীরা গত মাসের ২৬ এপ্রিল কাজে লেগে যান। পরবর্তী এক সপ্তাহ ধরে নানা ধরনের পরিকল্পনা করেন। প্রতিদিন তাঁদের গ্রহাণুর কাল্পনিক অবস্থান সম্পর্কে হালনাগাদ করা হতো।
তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বললেন, কাল্পনিক গ্রহাণুটি ৩৫ থেকে শুরু করে ৭০০ মিটারের মধ্যে যেকোনো আকারের হতে পারে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় দিনেই বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির আঘাত হানার সম্ভাব্য স্থান সম্পর্কে জানান। বলেন, এখন থেকে ছয় মাস পর সেটি ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার বিশাল অঞ্চলজুড়ে আঘাত হানবে। তবে সপ্তাহ শেষে তাঁরা অনেকটা নিশ্চিত হন, জার্মানি এবং চেক রিপাবলিকের মাঝামাঝি কোথাও আঘাত হানার আশঙ্কা বেশি।
এর সবই কাল্পনিক ঘটনানির্ভর। তবে ওই বিজ্ঞানীরা একটি হতাশাজনক তথ্যও দিয়েছেন। কোনো গ্রহাণু যদি সত্যি সত্যি ধেয়ে আসে, তো চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না। সেটি ঠেকিয়ে দেওয়ার মতো প্রযুক্তি এখনো আমাদের হাতে নেই। আর গতিপথ বদলে দিতে চাইলে কেবল ছয় মাসে তা সম্ভব না, আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এক যৌথ বিবৃতিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ‘গ্রহাণুর কাল্পনিক ঘটনাটি যদি বাস্তবে ঘটে, তবে আমাদের বর্তমান সক্ষমতায় এত অল্প সময়ে কোনো নভোযান পাঠাতে পারব না আমরা।’
গ্রহাণুটি গুঁড়িয়ে দিতে পারমাণবিক বিস্ফোরক ব্যবহারের কথাও বলেছেন তাঁরা। গ্রহাণুটি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকলেও তাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কমিয়ে আনা যেতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের। তবে যোগ করেছেন, বড় গ্রহাণুর বেলায় প্রচলিত পারমাণবিক অস্ত্র হয়তো পর্যাপ্ত কাজের নয়।