দিব্যি টিকে আছে ৪০০ বছরের বনসাই
গাছেরা যদি কথা বলতে পারত, এই গাছটির শাখায় শাখায় বলার মতো বহু গল্প জমা হয়ে আছে। প্রথম রোপণ করা হয়েছিল ১৬২৫ সালে। বয়স ৪০০ পূরণ হতে বাকি আর দুই বছর। বনসাইটির বর্তমান ঠিকানা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল আরবোরেটামে। ১৯৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে উপহার হিসেবে গাছটি দিয়েছিলেন জাপানি বনসাই মাস্টার মাসারু ইয়ামাকি। তবে আরবোরেটাম কি জানত বামন গাছটির দীর্ঘ ইতিহাস?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল মার্কিন বাহিনী। এর মাত্র দু মাইল দূরেই ছিল ইয়ামাকি পরিবারের বাস। ১৯৪৫ সালের ভয়ঙ্কর সে ঘটনায় নিহত হয় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। শহরটাকে দীর্ঘদিনের জন্য বিপর্যস্ত করে দেয়। তবে সৌভাগ্যক্রমে ইয়ামাকি পরিবার এবং তাঁদের সেই বনসাই গাছটি রক্ষা পেয়েছিল।
পাঁচ প্রজন্ম ধরে বনসাই গাছটির পরিচর্যা করছে ইয়ামাকি পরিবার। যুক্তরাষ্ট্রের ২০০ বছর পূর্তিতে পারিবারিক বনসাইটি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল বনসাই অ্যান্ড পেনজিং মিউজিয়ামে দান করেন মাসারু ইয়ামাকি। তবে এর ইতিহাস নিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করেননি।
২০০১ সালে ইয়মাকির নাতী হুট করে একদিন মার্কিন বনসাই সংগ্রহশালাটি দেখতে এলে শ্বেত পাইন গাছটির ইতিহাস সামনে আসে। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ হিরোশিমার সঙ্গে সম্পৃক্ততার ইতিহাস জানত না। তারা বিবরণে দুদেশের মধ্যে সৌহার্দের প্রতীকে জোর দিয়েছিল। পরে পুরো ইতিহাস উল্লেখ করা হয়।
জাদুঘরের সহকারী কিউরেটর ক্যাথলিন এমারসন-ডেল বলেন, ‘আমি গাছটির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এই গাছটি বহু বছর ধরে আরও বহু মানুষের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল। এই ইতিহাস মর্মস্পর্শী।’
সত্যিই তাই। গাছটি জনজীবনের কত ঘটনারই না সাক্ষী!