চাকরি প্রার্থীর মধ্যে কী দেখতেন স্টিভ জবস?
শুরু থেকেই অ্যাপলকে সফল প্রতিষ্ঠানের রূপ দিতে চেয়েছেন স্টিভ জবস। চেয়েছেন সেরা কর্মীদের এককাট্টা করতে। সে চেষ্টাতেই একবার অ্যাপলের বাইরে থেকে দুই ‘প্রফেশনাল’ ব্যবস্থাপক আনলেন। অথচ দিন কয়েক বাদেই তাঁদের আবার বরখাস্ত করেন।
সে সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে স্টিভ জবস বলেন, ‘এভাবে একদমই কাজ হয়নি। ওদের বেশির ভাগই নির্বোধ। তারা জানে কীভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হয়। তবে তারা জানে না, কীভাবে কাজ করতে হয়।’
সাক্ষাৎকারটা বেশ পুরোনো। স্টিভ তখন কালো রঙের টার্টলনেক জামা পরতেন না। অর্থাৎ সফলতার শীর্ষে তখনও ওঠেননি। তবু যে উপদেশ তিনি দিয়েছেন, যেকোনো সময়ের জন্যই তা সমান উপযোগী।
ব্যবস্থাপনায় ঘাঘু এই প্রফেশনাল (পেশাদার) ব্যবস্থাপকদের নিয়ে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে স্টিভ জবস চাকরির প্রার্থীদের মধ্যে ভিন্ন ধরণের গুণ খোঁজা শুরু করলেন। আর তা হলো প্যাশন। স্টিভ জবসের ব্যাখ্যাটা ছিল এমন, ‘আমরা এমন কর্মী চেয়েছিলাম যারা তাঁর কাজটা চমৎকারভাবে করতে পারে। এ জন্য ওরকম পাকাপোক্ত প্রফেশনাল হওয়া জরুরি না। এমন কেউ, কাজটা যাঁদের নখদর্পণে থাকে। যারা প্যাশন নিয়ে বোঝার চেষ্টা করেন, প্রযুক্তি কোথায় পৌঁছেছে এবং সে প্রযুক্তি দিয়ে তাঁরা কী করতে পারবেন।’
স্টিভ জবস কখনো দেখেননি, কার সিভি কতো চকচকে। অথবা আগে কে কোন প্রতিষ্ঠানে ছিল। তিনি আবেগ দিয়ে সমস্যার সমাধান বের করার মানুষ চেয়েছিলেন। বাইরে থেকে আনা ওই প্রফেশনাল ব্যবস্থাপকদের সরিয়ে অ্যাপলের আরেক বিভাগ থেকে এনে ডেবি কোলম্যানকে দায়িত্ব দিলেন স্টিভ। ডেবির তেমন অভিজ্ঞতা ছিল না। বয়স সবে ৩২। পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্যে। তবু টিকে গেলেন।
উৎপাদন বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালনের পর, বয়স ৩৫ গড়াতে না গড়াতেই অ্যাপলের চিফ ফিন্যানশিয়াল অফিসার (সিএফও) হয়ে যান ডেবি কোলম্যান।
স্টিভ জবস বলতেন, সেরা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয় না। কাজের প্রতি তাঁদের যদি আবেগ থাকে, স্মার্ট হয় এবং সঠিক পথে এগোতে থাকে, তবে তাঁরা নিজেরাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ভালো করে বুঝতে হবে।
জবস বিশ্বাস করতেন, কীভাবে কাজ করতে হবে—কর্মীদের তা না বুঝিয়ে, নেতার উচিত প্রতিষ্ঠানের সার্বিক লক্ষ্য বাস্তবায়নে মনোযোগী হওয়া। যেন সবাই সেই সাধারণ লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে কাজ করে।
ওই ভিডিওর পরের দিকে অ্যাপলের শুরুর দিকের কর্মীদের কথাও রয়েছে। অ্যান্ডি হার্টজফেল্ড অ্যাপলে প্রথম সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের একজন। তিনি বলেন, সাক্ষাৎকারের সময় একজন চাকরি প্রার্থীকে হয়তো মেকিনটোশ কম্পিউটারের প্রোটোটাইপ দেখানো হতো। এরপর দেখা হতো, তা দেখে সে প্রার্থীর প্রতিক্রিয়া কেমন হয়। প্রার্থীর মধ্যে যদি তেমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া না যায়, তবে তার সম্ভাবনা কম।
হার্টজফেল্ড বলেন, ‘আমরা চেয়েছি, তাঁদের চোখ যেন ঝিলিক দিয়ে ওঠে এবং সত্যিই যেন উত্তেজনা বোধ করে। তখন আমরা বুঝতাম একেই আমাদের দরকার।’
চাকরি প্রার্থীর মধ্যে কোন গুণ খুঁজতেন স্টিভ জবস? দেখুন ভিডিওতে