বিমানে আরামে ঘুমানোর ১৪টি কৌশল
দীর্ঘ বিমানযাত্রায় ঘুম না হলে বড় একঘেয়েমি ঠেকে। ক্লান্তির কারণও হতে পারে। ওয়েব ঘেঁটে আমরা বিমানে ঘুমানোর ১৪টি কৌশল খুঁজে বের করেছি। চলুন দেখে নেওয়া যাক।
১. আসন নির্বাচন
সিটগুরু ওয়েবসাইট এ ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। প্রত্যেক বিমানের আসন বিন্যাসসহ আলাদা আলাদা আসন সম্পর্কেও তথ্য পাবেন।
আরেকটা কথা মনে রাখতে পারেন—বাচ্চাকাচ্চাসহ হই-হুল্লোড় করা পরিবারগুলো সব সামনের দিকে বসে। অর্থাৎ আপনার সেদিকে বসা উচিত না।
তা ছাড়া, বিমানের কোন আসনে বসা উচিত, তা নিয়ে এই লেখাটি পড়তে পারেন।
২. বিমানের কোন পাশে বসবেন?
বাসায় ডান কাঁধে ঘুমান? তবে বিমানেও ডান পাশের উইন্ডো সিট বেছে নিন। বাঁ কাঁধে ঘুমালেও একইভাবে বিমানের বাঁ দিকটা বেছে নিন।
উইন্ডো সিটে বসে ঘুমানোর সুবিধা হলো, সহযাত্রীদের কেউ টয়লেটে যেতে চাইলে, আপনাকে ঘুম ঠেকে ডেকে তুলতে হবে না।
৩. আগেভাগে আসন নির্বাচন
আসন নির্বাচনের কাজটা আগেভাগে করা ভালো। মানে যতটা সম্ভব। এতে পরে হতাশ হতে হবে না। আর বেশির ভাগ জনপ্রিয় এয়ারলাইনে পরবর্তীতে আসন পরিবর্তনের সুযোগ তো থাকেই।
৪. সঙ্গে বালিশ রাখুন
দিন শেষে আরামটাই বড় কথা। দীর্ঘ বিমানযাত্রার আগে, ভ্রমণের উপযোগী পছন্দসই একটা বালিশ কিনে নিন। ডোনাট আকৃতির বালিশ ভালো লাগলে মাঝেমধ্যে সেটাকে উলটে-পালটে দিন। আর বিমানে বালিশ থাকলে, আরামের জন্য কোমরে পেছনে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখতে পারেন।
এভিয়েশন নিয়ে আরও জানতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে
৫. পরিচিত সুগন্ধি
আপনার বালিশ, কাপড়চোপড় এবং কবজিতে হালকা সুগন্ধি স্প্রে করতে পারেন। এমন কোনো সুগন্ধ যা আপনার ঘরের কথা মনে করিয়ে দেয় কিংবা ল্যাভেন্ডার ওয়েলের মতো কিছু।
৬. অন্যান্য অনুষঙ্গ
আলো আড়াল করতে ভালো মানের আই মাস্ক এবং বেসবল ক্যাপ সঙ্গে রাখতে পারেন। বাচ্চাকাচ্চার হই-হুল্লোড় না শুনতে চাইলে ইয়ারপ্লাগ ব্যবহার করুন। কানের আকার অনুযায়ী খাপ খাওয়াতে পারে, সিলিকনের এমন ইয়ারপ্লাগগুলো বেশি কার্যকর।
৭. আরামদায়ক পোশাক
ঢিলেঢালা পোশাক শুধু আরামদায়কই নয়, শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে। আঁটসাঁট স্টকিংসও এড়ানো ভালো। সবচেয়ে ভালো হয়, পায়জামা পরে ভ্রমণ করলে।
আরও পড়ুন: আমি হিউম্যান না রোবট, তা জেনে গুগলের কাজ কী
৮. ক্লান্ত হয়ে বিমানে উঠতে পারেন
ঘুম যদি সত্যি প্রয়োজন হয়, তবে না ঘুমিয়ে উপায় থাকে না। সেটা নিজের বিছানায় হোক, কিংবা বিমানে। এ জন্য ক্লান্ত হয়ে, মানে কাজ শেষ করে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারেন। আবার আগে কম ঘুমালে বিমানে ঘুম আসার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৯. কী খাবেন? কী খাবেন না?
বিমানভ্রমণের কয়েক ঘণ্টা আগেই ক্যাফেইন-সমৃদ্ধ এবং অতিরিক্ত চিনিওয়ালা খাবার পরিহার করুন। আবার অতিরিক্ত খেলেও ঘুমাতে সমস্যা হয়। মেনুতে তাই হালকা খাবার নির্বাচন করুন।
অ্যালকোহল ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে তবে একই সঙ্গে পানিশূন্য করে দেয়। এ জন্য হারবাল চা বা দুধ পান করতে পারেন। ট্রিপ্টোফান অ্যামিনো এসিড থাকায় ঘুম আসতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে দুই মিনিটের জন্য ঢুকলে ঘণ্টা পেরিয়ে যায় কেন
১০. সাময়িকী কি জরুরি?
যাদের পা লম্বা, তাদের জন্য আধ ইঞ্চিও বেশি। সুতরাং আসনে বসার আগে সব ধরনের সাময়িকী এবং ক্যাটালগ সরিয়ে মাথার ওপরে নির্ধারিত স্থানে রাখুন।
১১. চলচ্চিত্র ভুলে যান
অনেক বিমানে চলচ্চিত্র দেখার সুবিধা থাকে। তবে টিভি পর্দার উজ্জ্বল আলো আপনার মস্তিষ্কে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আবার অতি নাটুকে চলচ্চিত্র দেখলে ‘এরপর কী ঘটে’ ভাবতে ভাবতে ঘুমানোর ইচ্ছা চলে যাবে।
ধীর লয়ের সংগীত শুনতে পারেন। ভালো হয় নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন থাকলে। বই পড়া কিংবা মেডিটেশনও বিক্ষিপ্ত মন হালকা করতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: সুন্দর পিচাই যেভাবে গুগলের সিইও হলেন
১২. ঘুমের ওষুধ?
ঘুমের ওষুধ বেশ কাজের। তবে যারা কুঁজো হয়ে বসেন, তাদের ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিসের (রক্ত চলাচলে বাঁধা) ঝুঁকি বাড়ায়। ঘুমের ওষুধ যদি খেতেই হয়, তবে কম সময় কার্যকর থাকে, এমন ওষুধ বেঁছে নিন।
১৩. শরীরকে বুঝ দিন
দৈনন্দিনের নিয়ম অনুসরণ করলে, শরীর ভেবে নেয় আপনি ঘরের মতোই আরামদায়ক কোথাও আছেন। সম্ভব হলে, ঘরে সব সময় যে ময়েশ্চারাইজার ও ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করেন, সেটাই করুন। দাঁত ব্রাশ করুন। মাউথওয়াশ দিয়ে গার্গল করে নিন।
১৪. সিট বেল্ট বাঁধুন তবে…
বিমানে অতিরিক্ত ঝাঁকির (টার্বুলেন্স) সময় কেবিন ক্রুরা সব যাত্রীকে সিট বেল্ট বাঁধতে বলেন। প্রত্যেক আসনে গিয়ে সেটা নিশ্চিত করেন। নিরাপত্তার জন্যই এমনটা করা জরুরি।
সুতরাং বহু সাধনার ও আরামের ঘুম থেকে ডেকে তোলার ঝুঁকি এড়াতে চাইলে, কিছুটা ঢিলে করে (তবে দৃশ্যমান) সিট বেল্ট বেঁধে রাখুন।
আরও পড়ুন: চীনে ফেসবুক বন্ধের আসল কারণ কী